স্বাধীনতার পর আমাদের দেশের মিউজিক একটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। যুদ্ধ যেহেতু একটা অর্গানাইজড ব্যাপার, তেমনি আর্ট কালচারের ক্ষেত্রেও ডিফ্রেন্ট ওয়েতে একটা অর্গানাইজড ব্যাপার কাজ করে। আর সোসাইটি মূলত আর্ট কালচারের রসদ পেশ করে।রসদ থাকলেই যে ভালো আর্ট-ফার্ট হয়ে ওঠে এমন না। কিন্তু যুদ্ধের পর আমাদের মিউজিকে এর প্রভাব ছিলো ব্যাপক। একদিকে আজম খান’রা জানান দেয় সোসাইটিকে রিবিল্ড করতে হবে, যার ফলশ্রুতিতে হাজারো কণ্ঠ সুর মেলাতে থাকে। তেমনি ব্যাপক রোমান্টিক ঘরানার গান আমরা পাই ৭০জ এ। এক্ষেত্রে লাকী আকন্দ বা হ্যাপি আকন্দের নাম না নিলেই নয়। এবং এর পরের দশকও যেন সোসাইটির সাথে মিউজিকও খাপ খাওয়াতে চেষ্টা করতে থাকে।আবার সেই রোমান্টিকতা ও মেলোডিয়াস সুর আমরা পাই, ৯০জ এর শুরুর দিকে । এক্ষেত্রে লিরিসিস্ট ‘লতিফুল ইসলাম শিবলী’র বয়ানে ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি, তাই তোমার কাছে ছুটে আসি’ এইসব লাইনগুলা লেখা সম্ভব হয়েছে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের কারণে। প্রতিটা দশকেই যেমন মিউজিকের স্টাইল চেইঞ্জ হইছে, তেমনি টোনাল কালার, পিচ ও লিরিকে এসেছে পরিবর্তন।মিড ৯০জ পর্যন্ত বাংলা রক মিউজিককে ওল্ড স্কুল ধরলে,তার পরের হিসাবটা অনেক আলাদা! ততোদিনে বাংলা রক যেমন একটা প্রমিসিং জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, তেমনি অন্যদিকে জলসা ( যে অনুষ্ঠানটা আশ্চর্যজনকভাবে এখনো পপুলার ও প্রেইসড!) অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেমি-ফিউডাল কালচাঁড়ালিস্টদের মাধ্যমে শুদ্ধি পরীক্ষা চলছে! এসবকিছু মিলেই বাংলা রক তার যৌবন পার করছে গত শতাব্দীর শেষ দশকে।
নতুন শতকে রকের লিরিকে ও স্টাইলে আসে ড্যাস্টিক্যাল চেইঞ্জ ।৮০জ এ যেহেতু বাংলাদেশে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন শুরু হয়,তার পরের প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময়ে অর্থাৎ প্রায় দুইটা জেনারেশন আর্বানাইজেশনের ইনিশিয়াল স্টেইজের মধ্য দিয়া যায়। ক্লান্তিটা আসলে প্রকাশিত হইতে থাকে নতুন শতকে, গানের লিরিকে, সুরে ও ভোকালে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড তখন ইন্ডি’র বন্দনা শুরু হয়ে গেছে। অর্থাৎ নগর ও দেবালয় প্রায় একই আচরণ করছে।